দুবছর আগের কথা....
দুবছর আগের কথা।ক্লাশ ওয়ানের
একটা বাচ্চাকে পড়ানোর দায়িত্ব
পড়ল আমার উপর।
প্রথম দিন ওকে একটু নাড়া দিয়ে
দেখার ইচ্ছে হলো।প্রথমে প্রশ্ন
করলাম
-নাম কি তোমার?
ওর খাতার কভার পেজ তুলে
দেখিয়ে বলে দেখেন।সেখানে
তার পূর্ননাম লিখা।
কিছুটা হতভম্ব হয়ে পরের প্রশ্ন করলাম
- ধরো তোমার কাছে পাঁচটা ডিম
আছে।তুমি তিনটা খেয়ে ফেললা।
আর কয়টা থাকে?
ঃ একটাও না।
- কিভাবে?
ঃ আপনিতো আমারে চিনেন না।
পাঁচটা ডিম সামনে পাইলেতো
আমি সবগুলোই খেয়ে ফেলতাম।
- ধরো তোমার আব্বু তোমাকে
সকালে দুই টাকা দিল আবার
বিকালে দুই টাকা দিল কত হলো?
ঃ একটাকাও না।
- মানে?
ঃ আপনিতো আবার আব্বুকে চেনেন
না।কখনো আব্বু আমাকে টাকা
দেয়না।আম্মু দেয়।
আমি মাথায় হাত রেখে বসে আছি।
এমন সময় আন্টি ভিতর থেকে হাঁসতে
হাঁসতে আমার কাছে এলেন।বলেন "ও
অনেক দুষ্ট স্যার।সব মিরাক্কেল
দেখে শিখেছে"।
আমি বললাম " সমস্যা নেই ঠিক হয়ে
যাবে।
আংকেল আন্টি অমায়িক লোক।
দোতলা একটা সুন্দর বিল্ডিংয়ে
ভাড়া থাকেন।আংকেলই একমাত্র
উপার্জনকারি।
বছরখানেক পর আমার মেস
রিপ্লেসমেন্টের জন্য টিউশানটা
বাদ দিতে হয়েছিল।যদিও খারাপ
লেগেছিল।
দুবছর পেরিয়ে গেল।এতদিনে আমার
সুস্পষ্ট কথাগুলো মনেও নেই।
সেদিন রাস্তার পাশে গাড়ির জন্য
অপেক্ষা করছিলাম।ধুলো মাখা
স্কুলড্রেস পরা একটি ছেলে আমার
দিকে তেড়ে আসছে।কাছে এসেই
ঃআমি অনিকেত স্যার।এখন থ্রিতে
পড়ি।
-কোন অনিকেত?
ঃওই যে স্যার আমাকে আপনি
পড়াতেন।
-ও মনে পড়েছে।কেমন আছো তুমি?
ঃ ভালো।
- তোমার আব্বু আম্মু কেমন আছে?
ঃ আব্বু মারা গেছেন।আর আম্মু
সারাদিন কাঁদেন।
কথাটা শুনতেই প্রচন্ডরকম খারাপ
লাগল।কিছু সময় চুপ থেকে বলি
- এখন কোথায় থাকো ওখানেই?
ঃ না স্যার। ওই যে বস্তিটা আছেনা
ওইটার পাশে চোট্ট একটা ঘরে।
- তোমার আম্মু কি করে এখন?
ঃ মানুষের কাপড় সেলাই করে।আমি
দোকান থেকে সুই, সুতো সব কিছু এনে
দেই।
কতটা খারাপ লেগেছিল তখন
বোঝাতে পারবো না।তবে একটা
জিনিস আরো একবার প্রমান হলো "
কোন কিছু শিখে মানুষ দুনিয়াতে
আসে না।পরিস্থিতি তাকে
শেখায়।নয়তো সেই দুষ্ট অনিকেতও
এখন মায়ের জন্য দোকান থেকে
সূই,সুতো এনে মাকে সাহায্য করতে
পারতো না"।ভালো থাকুক
অনিকেতরা।
.
.
.
একটা বাচ্চাকে পড়ানোর দায়িত্ব
পড়ল আমার উপর।
প্রথম দিন ওকে একটু নাড়া দিয়ে
দেখার ইচ্ছে হলো।প্রথমে প্রশ্ন
করলাম
-নাম কি তোমার?
ওর খাতার কভার পেজ তুলে
দেখিয়ে বলে দেখেন।সেখানে
তার পূর্ননাম লিখা।
কিছুটা হতভম্ব হয়ে পরের প্রশ্ন করলাম
- ধরো তোমার কাছে পাঁচটা ডিম
আছে।তুমি তিনটা খেয়ে ফেললা।
আর কয়টা থাকে?
ঃ একটাও না।
- কিভাবে?
ঃ আপনিতো আমারে চিনেন না।
পাঁচটা ডিম সামনে পাইলেতো
আমি সবগুলোই খেয়ে ফেলতাম।
- ধরো তোমার আব্বু তোমাকে
সকালে দুই টাকা দিল আবার
বিকালে দুই টাকা দিল কত হলো?
ঃ একটাকাও না।
- মানে?
ঃ আপনিতো আবার আব্বুকে চেনেন
না।কখনো আব্বু আমাকে টাকা
দেয়না।আম্মু দেয়।
আমি মাথায় হাত রেখে বসে আছি।
এমন সময় আন্টি ভিতর থেকে হাঁসতে
হাঁসতে আমার কাছে এলেন।বলেন "ও
অনেক দুষ্ট স্যার।সব মিরাক্কেল
দেখে শিখেছে"।
আমি বললাম " সমস্যা নেই ঠিক হয়ে
যাবে।
আংকেল আন্টি অমায়িক লোক।
দোতলা একটা সুন্দর বিল্ডিংয়ে
ভাড়া থাকেন।আংকেলই একমাত্র
উপার্জনকারি।
বছরখানেক পর আমার মেস
রিপ্লেসমেন্টের জন্য টিউশানটা
বাদ দিতে হয়েছিল।যদিও খারাপ
লেগেছিল।
দুবছর পেরিয়ে গেল।এতদিনে আমার
সুস্পষ্ট কথাগুলো মনেও নেই।
সেদিন রাস্তার পাশে গাড়ির জন্য
অপেক্ষা করছিলাম।ধুলো মাখা
স্কুলড্রেস পরা একটি ছেলে আমার
দিকে তেড়ে আসছে।কাছে এসেই
ঃআমি অনিকেত স্যার।এখন থ্রিতে
পড়ি।
-কোন অনিকেত?
ঃওই যে স্যার আমাকে আপনি
পড়াতেন।
-ও মনে পড়েছে।কেমন আছো তুমি?
ঃ ভালো।
- তোমার আব্বু আম্মু কেমন আছে?
ঃ আব্বু মারা গেছেন।আর আম্মু
সারাদিন কাঁদেন।
কথাটা শুনতেই প্রচন্ডরকম খারাপ
লাগল।কিছু সময় চুপ থেকে বলি
- এখন কোথায় থাকো ওখানেই?
ঃ না স্যার। ওই যে বস্তিটা আছেনা
ওইটার পাশে চোট্ট একটা ঘরে।
- তোমার আম্মু কি করে এখন?
ঃ মানুষের কাপড় সেলাই করে।আমি
দোকান থেকে সুই, সুতো সব কিছু এনে
দেই।
কতটা খারাপ লেগেছিল তখন
বোঝাতে পারবো না।তবে একটা
জিনিস আরো একবার প্রমান হলো "
কোন কিছু শিখে মানুষ দুনিয়াতে
আসে না।পরিস্থিতি তাকে
শেখায়।নয়তো সেই দুষ্ট অনিকেতও
এখন মায়ের জন্য দোকান থেকে
সূই,সুতো এনে মাকে সাহায্য করতে
পারতো না"।ভালো থাকুক
অনিকেতরা।
.
.
.
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন