ডিপ্রশনে ভালো থাকা
আগের 'ডিপ্রেশন'পোষ্টে বলেছিলাম "ধন্যবাদ তোমাকে ডিপ্রেশন নামক অনুভূতি, তোমার জন্যই আজ মানুষ চিনতে শিখে গেছি।"
তবে ডিপ্রেশন নিয়ে বসে থাকাই কি চলে? একরাত কান্না, দুই রাত কান্না এভাবে কতো?
ডিপ্রেশন এর ব্যাপারটা হলো সেকেন্ডেই ভিতর তছনছ করে দেয়। মানে কিছু একটা মনে হলো, সেটা মাথায় গেঁথে গেলো আর ভেতরে ভেতরে কষ্টের সৃষ্টি দিতে থাকলো।
দেখা যায় সারাদিন ভালো, হাসাহাসি করে দিন কাটিয়ে বাসায় ফিরে কলিং বেলে টিপ দেয়ার সাথে সাথেই মন খারাপ হয়ে গেলো।
এখন আমি কিভাবে ব্যস্ত থাকবো? কিভাবে এসব দুশ্চিন্তাকে আড়াল করবো।
এর উপরই খারাপ লাগা ভাবনাগুলো এসময়ে আরো বেশি মনে হতে থাকে।
না শুধু এতটুকুই না! বিগত কয়েক বছরে নিজের সাথে হওয়া ভয়ানক খারাপ জিনিসগুলোও তখন মনে পড়তে থাকে।
তখন দেখা যায় টিভির সামনে গেলে চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে মেজাজ গরম হচ্ছে। মা খাবার নিয়ে আসলে এতেও মেজাজ গরম হচ্ছে। মোবাইলে একজনের সাথে কথা বলতেও মেজাজ গরম হচ্ছে। ফেসবুকে ক্লোজ বন্ধু-বান্ধবীদের ম্যাসেজ "হুম-হা" দ্বারা রিপ্লাই দিতে হচ্ছে নিজের অজান্তেই।
আমি বা আপনি সবাই এরকম সিচুয়েশনের মুখামুখি হই।
মাথায় অনেক খারাপ খারাপ ভাবনাও আসতে থাকে।
"মরে গেলেই তো সব শেষ।"
বিছানায় শুয়ে শুয়ে ফ্যানের দিকে তাকিয়ে থাকা আর ভাবা মরার সময় কি এর থেকেও বেশি কষ্ট হয়? তা নাহলে মরে যাওয়াটাই ভালো।
কখনো বা রান্নাঘর থেকে ছুড়ি এনে উলট পালট করে দেখতে থাকা! কতটা ধার এটা? মানসিক যন্ত্রণা থেকেও কি বেশি ধারালো?
কিন্তু বিভিন্ন কারণে বিবেকে বাধে খারাপ কিছু করতে।
যতই বলি মা বাবা থাকতে কেনো মরে যাবো তারপরো যখন ডিপ্রেশন বেড়ে যায় তখন হতাশায় নিজেকে বড়ই অসহায় মনে হয়। দেখা যায় মা-বাবার সাথেও এসময় ঝগড়া হয়ে যায় যেকোনো কারণে।
নিজেকে পৃথিবীর একা একজন লাগে। যাকে ভালো লাগার মতো কোনো মানুষ জন্মেনি!
তবে কি এসব থেকে মুক্তি মিলে না? মিলে।
সময় নিতে হয়।
যখনই খারাপ লাগার পরিমাণ বাড়তে থাকবে তখনি গল্পের বই পড়তে বসেন বা যেকোনো কমেডিয়ান মুভি অথবা ইউটিউব এ গিয়ে ফানি ভিডিও দেখতে থাকুন। ১০ মিনিট পর দেখবেন সব কিছু স্বাভাবিক।
কখনো সেই খারাপ লাগাকে প্রশ্রয় দিবেন না।
ব্যাপারটা অনেকটুকু অধিকার যাঁতানোর মতো। একটু পেলে আরেকটু পেতে ইচ্ছে করে।
কাজেই বিষয়টাকে প্রশ্রয় দেয়া চলবে না। যখনই কোন একটা বিষয় নিয়ে মন খারাপ হবে তখনই ঐ বিষয়ের আগের কোন মজার ঘটনা চিন্তা করতে থাকবেন।
আবার আমাদের সবার এমন একটা ফ্রেন্ড থাকে যার সাথে সব করা যায়। মন খারাপ হলেই তাকে জ্বালাতে শুরু করবেন। তার রাগান্বিত চেহারা দেখে পৈশাচীক আনন্দটুকু উপভোগ করবেন।
দেখবেন অনেক ভালো লাগবে।
আর যদি মন খারাপের পরিমাণ অতিমাত্রায় বেড়ে যায়, মানে সব কিছু অসহ্য লাগতে শুরু করবে তখন নিজের রুমের লাইট বন্ধ করে দরজা লাগিয়ে মিনিট ১০ মন ভরে কেঁদে নিবেন।
কান্নাটা যেনো মনের ভেতর থেকে আসে।
অনেক কষ্ট হয় এই কাঁদায়। কারণ ভেতরটা চিড়ে আসার মতো অনুভূতি হয়। তারপরো কাঁদার ফলে ১০ মিনিটের কষ্ট আপনাকে দীর্ঘ রাত মন খারাপ থেকে মুক্তি দিবে।
অল্পতে বেশি কষ্ট ভালোনা? সারাদিন-রাত অল্প অল্প করে কষ্ট পাওয়া থেকে?
কাঁদলে মন ভালো হয়ে যায়। মনের কষ্টটুকু বের হয়ে যায়।
আর সবসময় এটা চিন্তা করবেন কেনোই বা আমি ডিপ্রেশনে ভোগবো? আমি যার জন্য বা যে কারণে এতো মাথা ঘামাচ্ছি সে বা সেই জিনিস কি আদৌ আমাকে নিয়ে ভাবে?
জীবনে খুশিকে জয় করতে হলে এসব ব্যাপারে একটু স্বার্থপর হতে হয়।
"তুমি আমাকে সুখে রাখবা, গুনবো।
তুমি আমাকে কষ্ট দিবা, তোমাকে আমি গুনবোও না।"
এসব ব্যাপারে সব সময় হিসাব করে চলবেন আর চিন্তা করবেন।
তবেই হবে আপনার জীবন হাসিখুশি। :')
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন