স্টোরী অফ হানড্রেড ডেইজ

    স্টোরী অফ হানড্রেড ডেইজ
......................................................
আজ কলেজের প্রথম দিন । আমি অনিক কুমিল্লা থেকে এইখানে ভর্তি হয়েছি। বরাবরই আমার মেডিকেল প্রোফেশানের শখ ছিলো। কিন্তু মেধাবী না হওয়ায় প্যারামেডিকেলে পড়ছি। এই নোয়াখালি ম্যাটসে একমাত্র শান্ত ছাড়া কাউকেই চিনি না। বাবা হোস্টেলে দিয়ে চলে গেছে তাই আমার মন খারাপ ।ক্লাসে বসে আছি কারো সাথে কথা বলছি না। হটাৎ কোন মেয়ের ডাকে পিছে ফিরলাম।
মেয়েঃ এইযে চশমিস এতক্ষন ডাকছি কোন দেশে ছিলেন?
আমিঃ দেখেন আমার নাম চশমিস না।
মেয়েঃ যেই সাইজের চশমা পরছেন তাই চশমিস বললাম,আর আমার দোষ কি আমি কি আপনার নাম জানি?
আমিঃ জানার দরকারও নাই।
এইকথা বলে চলে আসলাম। ক্লাসের অনয কিছু ছেলে ব্যাপার টা দেখে এগিয়ে আসে।
রবিনঃ কি হইছে ভাই?
আমিঃ দেখেন ভাইয়া আমার মন ভালো না আর উনি আসছে পেচাল পাড়তে।
রবিনঃ বাদ দে। আমি রবিন। কুমিল্লা থেকে।তুই?
আমিঃ আমিও কুমিল্লা থেকে।
রবিনঃতাহলে তো দেশি ভাই। ফ্রেন্ড?
আমিঃ ওকে।
রবিনের সাথে আরো অনেক ছিল ক্যাম্পাসে ।পরিচিত হলাম ।বন্ধু ,আড্ডা, বই ভালোই কাটছিলো। তবে মেয়ের এড়িয়ে চলতাম আমরা। দেখতে আমাদের পরিক্ষা চলে এল(যদিও ম্যাটসে সারাবছরই পরিক্ষা থাকে) ।পরিক্ষার হলে গিয়ে দেখি ঐ মেয়ে আমার পাশের সিটে। তো পরিক্ষা চলছে। আমি একটাই কলম নিয়ে এসেছিলাম ।ভাগ্য খারাপ হটাৎ কালি শেষ। মেয়েটার কাছে একটা কলম চাই
আমিঃ আপি একটা কলম হবে?
মেয়েঃপরিক্ষা কি কলম ছাড়া দিতে এসেছেন?
আমিঃ আসলে আমার টা শেষ।প্লিজ!!
মেয়েঃ নিন।
আমি কিছু না বলেই লিখতে শুরু করলাম।কিছুক্ষন পর আমার লিখা প্রায় শেষ । মেয়ের ডাকে নজর দিলাম। তখনি মেম আমার খাতা নিয়ে গেলেন । হল থেকে বেরিয়ে দোকানে বসে আছি।তখন
এইযে সরি !!
পিছে তাকিয়ে দেখি সেই মেয়ে।
আমি;ধন্যবাদ
মেয়েঃ কেন? আমার কারনে আপনার খাতা নিয়ে গেল।আবার ধন্যবাদ দিচ্ছেন!
আমিঃআরে না আমার তো ৯০% শেষ।আপনি কলম না দিলেতো তাও হত না।আর হ্যা সরি!
কেন?
আপনাকে হেল্প করতে পারিনি তাই!
আপনি পারেন বটে। আমি নিহা। নিহা।রামগঞ্জ থেকে।
আমি অনিক। কুমিল্লা থেকে
নিহা হাসতে হাসতে “ও আচ্ছা তাইতো বলি এত দুষ্টামী কেমনে করে। কুমিল্লার ইতর”
তার সেই হাসিতেই আমার ফাসি হয়ে গেল।নিহার ডাকেই বাস্তবে ফিরলাম
নিহাঃফ্রেন্ডস?
আমিঃ অবশ্যই।
সেদিন থেকে আমার বিশৃঙ্খল জী।বনে শৃঙ্খল পরলো।দেখতে দেখতে প্রায় দুই মাস শেষ ।বৃষ্টিতে ভেজা,ফুচকা খাওয়া , মারামারি(যদিও মার আমার খেতে হত)।এইভাবেই চলছিলো ।বন্ধে বাড়ী এলাম।মনে হচ্ছে কিছু একটা মিশ করছি। যদিও ফোনে কথা হত। নিহা একদিন বললো সারপ্রাইজ আছে। কি তা জানতে দিলো না।
কলেজ খোলার দিন নিহার জন্য অপেক্ষা করছি। হটাৎ দেখি নীহা কারো হাত ধরে আসছে। কাছে আসতেই আমি অবাক এটা আর কেউ না । আমার মামাত ভাই শান্ত।
নিহাঃ পরিচয় করিয়ে দেই ,এই হচ্ছে শান্ত ।আমার .... বুঝতেই পারছিস।
আমিঃ পরিচয় করাতে হবে না। এ আমার ভাই ।যা আজ থেকে তুই ভাবি হয়ে গেলি
নিহাঃ তাই নাকি?
আমিঃ আচ্ছা আমি যাই।
আর দারালাম না। সত্যি বলতে পারছিলাম না। চলে এলাম মামার বাড়ীতে। ফোন ও বন্ধ ।পাগল প্রায় অবস্থা। শেষে একদিন জ্ঞান হারাই। হুশ হলে দেখি হসপিটালে ।নিহা বসে কাদছে। বাবা,মা, মামা ,নিহার বাবা মাও আছে। আমার জ্ঞান ফিরতেই তারা বাইরে চলে গেল।
আমিঃ আরে তুই এখানে?
নিহাঃ একদম চুপ। খুব সাহস হইছে না। আমাকে ছেড়ে পালাচ্ছিলি।ভালোবাসলে বলতে পারিস না কেন? আমিতো মেয়ে । তুই কি? শান্ত সহ প্লান ছিলো আমার।আজ অমিত না বললে তো হারিয়েই গেছিলি।
আমিঃ তোকে ভয় পাইতো, তাই সাহস হয় নি।
নিহাঃ ভয় পেলে নিজের ক্ষতি করতে গেলি কেমনে?
বাবা আর নিহার বাবা ঢুকলো ।আমি বাবার ভয়েই শেষ।
আমিঃ সরি বাবা
বাবাঃ সরি বলার দরকার নাই। পড়াশোনা ঠিক রাখলেই হবে।একদিন জ্ঞানহীন ছিলে তুমি।আচ্ছা বাদ দাও ,আজ রিলিজ দিবে।আগামি সপ্তাহে বিয়ে ।দিন দেখা শেষ। তোমার মা ।ছোটমা শ্বাশুরী থাকবে শপিং করে বাড়ী যেও।
আমিঃ কিন্তু?
শ্বশূর আব্বাঃ কোন কিন্তু নাই ।
আর কি করা দিল্লি কা লাড্ডু খেতেই হলো। শূভ্ররাত্রীর রাতে সবার আবদার মিটিয়ে যেই রুমে ঢুকলাম অমনি দরজার পেছনে দাঁড়ানো ম্যাডাম দরজা অফ করে দিলো।
আমিঃ এইটা কি হল ভয় পেলাম তো।
নিহাঃ ভয়ের গুষ্টি কিলাই তোর ।আগে প্রোপজ কর তার পর কথা।
আমি একটা ফুল নিয়েঃ তোর হাসিতে সে দিনই আমার ফাসি হয়েছিল।তুই কি আমার নিশীতার মামনি হবি?
নিহাঃ আগে নিশিতার বাবাকে ঠিক করি তার পরই নিশিতা।
বাকীটা ইতিহাস...............................

-পথক্লান্ত হিমু

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দিশাহীন চোখে খুজে যাই

হায়রে জীবন আর তার কঠিনতম বাস্তবতা....

ভালোবাসা ভালোলাগা এক নয়